“কূলের সমীপে”
মো: শামছুজ্জামান
(২৯ এপ্রিল ১৯৯১ সালের চট্টগ্রামের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তি স্বচক্ষে দেখা বিভৎস্য ও করুণ আর্তমানবতার স্মরণে লেখা)
(লেখা: ০৭/০৫/১৯৯১ ইং)
কে তুমি সমীরন? কি নাম তােমার?
জুয়েল, পারুল, সােহেল কিংবা আনােয়ার!
কোথায় তােমার গাঁ, মহেশখালী, চকোরিয়া?
চরফ্যাশন আর কুতুবদিয়া কিংবা আনােয়ারা?
সবই শুনেছি স্বচক্ষে দেখেছি সে দিনের ঘটনা
গভীর রাতে হিংস্র সাগরের পীড়ন যাতনা।
আজ তুমি নিঃস্ব পিতা মাতা সবই হারা
আদর ভালােবাসা দিয়ে আগলে রেখেছিল যারা।
কোথায় তারা আজ জানাে না তাদের ঠিকানা,
এমনটি হবে তােমার নয়,সকলেরই ছিল অজানা।
তােমারই মত কত সন্তান,স্বজন হারা ব্যথিত দিলে
জীবনের সাথে পাঞ্জা লড়িছে এই বিরান উপকূলে।
দু’টি জীবনের মিলন মােহনায় যখনই দিতেছে পাড়ি
জরিনার বাসর ছিন্ন করি সুখ দিয়েছে আঁড়ি।
আঁতুর ঘরে দুঃখিনী মা আর ভূমিষ্ট নবজাতক
ছিন্ন করিছে মায়ের স্নেহ-মমতা নির্দয় ঘাতক।
সন্তান হারা কত মাতা-পিতার নিস্ফল হাহাকার
সবকিছু হারিয়ে অবুঝ শিশুর বুক ফাটা চিৎকার।
চারিদিকে শুধু লাশের মিছিল দূষিত করিছে বাতাস
কাফন ছাড়া দাফন হয়েছে অচেনা কত লাশ।
গাছের শাখায় ঝুলিছে কত নিঃপ্রাণ দেহ
তারই মাঝে স্বজনের লাগি খুঁজিয়া ফিরিছে কেহ।
কান্না ভুলিয়া পাষাণের লাগি আসিয়াছে কেহ ফিরে
খুঁজিয়া পাইবে না তাই, এই ধু ধু মরু তীরে।
চেয়ে দেখ চারিদিকে সবখানে একাকার
মুছে ফেল সব ব্যাথা মনে আনো ধিক্কার।
ফিরে আস তব কুলে জীবন গড়ার আঙ্গিনায়
সাহসের সাথে কিছু স্বপ্ন জড়াও পথ চল নির্ভয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।